একটি নদী
আমার তো বেশ মনে পড়ে
আজও আমি যাইনি ভুলে
নাম না জানা নদী ওরে
বয়ে যেতো দূকুল ছুঁয়ে।
দিবস রাতি তাড়িই পাড়ে
কত লোকে বসত যে গড়ে
নদীর বালি চড়া রোদে
ডাক দিত যে ব্যাকুল করে।
তারি টানে ছুটে যেতাম
ঘাটের পড়ে দিয়ে দিতাম
ছোট্ট একটি ডুব
তখন চারিদিক নিশ্চুপ।
তখন নদীর জলে ভিড়টি করে
শালিক কিছু চানটি সারে
খোলামনে সাঁতরে নিতে
নৌকা কিছু পাড়ি দিত।
মনে আমার হত তখন
আমি মাঝি হব কখন
ইচ্ছামতো হারিয়ে যাব
মনের মতো গানটি গাব।
সূর্য্যি যবে অস্তমিত
নৌকা দূরে হারিয়ে যেত
ভাটিয়ালি গানের যে রেশ
সন্ধ্যে বেলাই শোনাত বেশ।
দূর গগনের তারার দল
দিয়েছে দেখা গান শোনার ছল
ভোরটি হলে মিলিয়ে যেত
ঘরে ফেরার সময় হত।
গানের খেয়া ঘাটে ফিরে
মাঝিরা সব বসে ঘিরে
জমিয়ে দিত কথা দিয়ে
সুখ দুঃখের পসরা নিয়ে।
কথা শেষ হবার আগে
পূব গগনে আগুন লাগে
একে একে সময় করে
ঘাটটিকে যে ফেলল ঘিরে।
নানান আওয়াজ নানান কাজে
নদীর জলে মল যে বাজে
বেলা শেষের সময় এলে
ঘাটটি তখন ফাঁকা হলে।
নৌকাগুলো চলে গেছে
মন যে আমার পিছে পিছে
হারিয়ে যেতাম মাঝ নদীতে
দূরগগনে গানের স্রোতে।
নদীটির আজ শীর্ণ কায়া
হাতছানি দেয় বিষাদ ছায়া
হারিয়ে গেছে ভাটিয়ালি গান
ঘাটের পাড়ে কত কলতান।
বন্দী হয়ে লোহার খাঁচাই
নদী যে তার স্রোতটি হারায়
বুজে গেছে তার যে ধারা
বুকে তার হঠাৎ খরা।
নদী চলে বিষাদ ভারে
অতীত স্মৃতির পটটি ধরে
বিষাদ বুকে জল যে আসে
তখন বানে দুকূল ভাসে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন